নারী বলে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেছেন, ‘আমার নামের সঙ্গে অনেক এ বি সি ডি লাগানো থাকলেও আমাকে সেটা (নারী বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে কি না) শুনতে হয়েছে। বারবার এ কথা শুনতে হয়েছে এবং সব নারীকেই এমন কথা শুনতে হয়।’
সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত আলোচনা সভায় এভাবেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন দীপু মনি। জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ওই সভায় আলোচনার বিষয় ছিল ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’।
দীপু মনি বলেন, ‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অনভ্যস্ততার তো একটা বিষয় ছিলই, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চেয়ারে সাংবাদিকরা সব সময় বয়স্ক একজন পুরুষকে দেখেই আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে একজন নারী আসায়, যিনি তখন খুব বেশি বয়স্ক নন সেটা দেখে তাদের একটা ধাক্কা লাগতেই পারে। কিন্তু আমার আগে বা পরে কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে কি না সেই প্রশ্ন কোনো সাংবাদিক বন্ধু করেননি। আমার নামের সঙ্গে অনেক এ বি সি ডি লাগানো থাকলেও আমাকে সেটা শুনতে হয়েছে। এটি বারবার শুনতে হয়েছে এবং সব নারীকেই শুনতে হয়।’
দীপু মনি বলেন, ‘কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হলে তাকে অস্পৃশ্য ভাবা হয়। এটা পুরোপুরি মানসিকতার ব্যাপার। একাত্তরে যা হয়েছিল তার থেকে ঘৃণ্য একটি জায়গায় আমরা পৌঁছেছি। ভাষা একটি খুব জরুরি বিষয়। ভাষা দিয়ে নারীকে দাবিয়ে রাখা হয়। যখন কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হয় আমরা বলি তার সম্ভ্রমহানি হয়েছে। কুকুর কামড় দিলে তো আমাদের সম্ভ্রমহানি হয় না। একটা পুরুষ ধর্ষণ করলে একটা নারীর কীভাবে সম্ভ্রমহানি হয়। সম্ভ্রমহানি তো সেই পুরুষের হওয়ার কথা। আমরা কেন ধর্ষককে সম্ভ্রমহারা পুরুষ বলি না।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, কবি হাসান হাফিজ, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনুসহ আরও অনেকে।